সর্বোচ্চ ২৪ বছর বয়স হবে জিয়া ভাইয়ের। নিজের বয়সটাও ঠিক মত বলতে পারেন না। নিরক্ষর বাবা মা জন্মসাল মনে রাখে নি। বিগত সাড়ে ৬ বছর থেকে এই জিয়া লড়াই করছে ব্লাড ক্যান্সারের সাথে। তার অসহায় পান বিক্রেতা বাবার পক্ষে ছেলের ক্যান্সার এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয় নি। নিজের পরিবার সামলাতেই হিমশিম খেতে হয় তাকে। এর মধ্যে ছেলের চিকিৎসা কিভাবে সম্ভব!

তাই বাধ্য হয়ে বেঁচে থাকার আশায় জিয়া ভাই ঢাকায় চলে আসেন কর্মসংস্থানের খোঁজে ও উন্নত চিকিৎসার জন্য। অসুস্থ অবস্থায় অনেক কাজ করতে গিয়েও করতে পারেন নি। প্রতি মাসের ওষুধ কেনার টাকাটাও যোগাড় করতে পারেন নি। তাই নিয়মিত ওষুধ ও খেতে পারেন নি। এতকিছুর পর ও অভিমান করে আর বাড়ি ফিরে যান নি। অসুস্থ শরীরেই ঢাকায় কিছু একটা করার চেষ্টা করে গেছেন।

অবশেষে ঢাকা কলেজের পাশে চন্দ্রিমা মার্কেটের সাথেই ফুটপাতে একটি চা এর দোকান দিয়েছেন। অনেকদিন থেকেই অনুরোধ করছেন যেন একবার দোকান টা দেখে আসি। আজ সুযোগ পেয়ে জিয়া ভাইয়ের চা এর দোকানটা দেখতে গিয়েছিলাম। সকালে-দুপুরে শুধু রুটি আর কলা খেয়ে অসুস্থ শরীরে সারাদিন রোদে দাঁড়িয়ে চা বিক্রি করে যাচ্ছেন। ফুটপাতে চায়ের ছোট্ট একটা টং দোকান হলেও এটাই তার স্বপ্ন। এই চায়ের দোকান দিয়েই জিয়া ভাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার ক্যান্সার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে। এইরকম জিয়া ভাইরাই প্রকৃত যোদ্ধা। তারা হার মানে না, হার মানতে জানে না।

এইসব যোদ্ধাদের পাশে থাকা প্রয়োজন আমাদের সকলের। এরপর থেকে কখনো নিউমার্কেটে গেলে একবার জিয়া ভাইয়ের টং দোকান টা দেখে আসতে পারেন। নাহয় এক কাপ চা খেয়ে এলেন। বলে আসলেন, ‘ভাই আমরাও পাশে আছি আপনার লড়াইয়ে।’ এটাই হয়ত তাকে অনেক সাহস যোগাবে তার লড়াই চালিয়ে যেতে।

জিয়া ভাইরা ভালো থাকুক। ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে যাওয়া সকল যোদ্ধার প্রতি রইলো অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা!

লেখা এবং ছবি – Nur A Shafee Ahnaf

#StandUpToCancer #Day48 #100DaysOfPositivity #SpreadPositivity#PositiveBangladesh